মসৃন শেভের গোপন রহস্য জানেন কি?
নরসুন্দরের কাছে গিয়ে চুল কাটানো বা দাড়ি কাটানোর মতো সময় আজকাল খুঁজে বের করা অনেক কষ্টকর।
প্রচন্ড ব্যস্ত এবং যান্ত্রিক জীবনে সেলুনে যাওয়া
তারপর মনমতো চুল-দাড়ি কাটতে না পারার মতো অবস্থায় পড়তে হয় প্রায়ই। কেমন হয় যদি ঘরে বসেই শেভ করে নিতে পারেন, তাও কোনো ঝামেলা ছাড়াই?
ঘরে বসেই শেভ করার জন্য প্রয়োজন কিছু কৌশলের। যেসব কৌশলে আপনি ব্যথামুক্ত ও ঝামেলা ছাড়া খুব কম সময়ে দাড়ি শেভ করতে পারবেন এবং আপনার মুখের সাথে মানানসই করে নিজের স্টাইলে পরিবর্তন আনতে পারবেন।
আজ আমরা কথা বলবো এমন কিছু টিপস নিয়েই যা হয়তো এতদিন আপনি ভেবেও দেখেননি।
১. শেভিং এর জন্য ত্বককে প্রস্তুত করে নিন
একটু উদ্ভট শোনালেও শেভ করার পূর্বে আপনার ত্বকে কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। তাই প্রথমেই সরাসরি ছুরি কাঁচি নিয়ে বসে না গিয়ে বরং মুখে পানি দিয়ে ভিজিয়ে একটু অপেক্ষা করুন।
অন্তত ১০ মিনিট মুখের ত্বক পানিতে ভিজিয়ে নরম করে নিন। এতে করে পরবর্তীতে আপনার শেভ করা অনেক সহজ হবে।

২. ত্বকের ভেতরটা ঠাণ্ডা রাখুন
অনেকেই মনে করেন শেভ করার আগে মুখ গরম পানি নিয়ে ধুয়ে নিলে ভালো। এটি এক অর্থে সত্য কারণ গরম পানি খুব ভালো পরিষ্কারক হিসাবে কাজ করে।
তবে আমাদের পরামর্শ হলো মেনথল যুক্ত ফেইসওয়াশ দিয়ে এবং ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। ত্বকের ভেতরটা ঠাণ্ডা হয়ে এলে শেভিং এ আপনার কষ্ট কম হবে।
গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিলে চামড়া খুব সহজেই শুকিয়ে যায় এবং খসখসে হয়ে যায়।

৩. বিরতি নিয়ে শেভ করুন
অনেকেরই অফিসে নিয়মিত ক্লিন শেভ করে যেতে হয়। অনেকে ব্যক্তিগত ভাবেই ক্লিন শেভ করতে পছন্দ করেন।
এক্ষেত্রে পরামর্শ হলো সপ্তাহে অন্তত এক দিন বিরতি দিন। এটি আপ্নাত ত্বককে বিশ্রাম দেবে এবং আপনি নিজেও মানসিক ভাবে পরদিন শেভ করার জন্য ফুরফুরে মেজাজে তৈরি থাকতে পারবেন।

৪. শেভিং ব্রাশে চড়া বিনিয়োগ করুন
শেভিং ব্রাশ রেজরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রাশের সাহায্যেই আপনি পর্যাপ্ত ফোম বা ক্রিমে ফেনা তৈরি করতে পারেন যা দাড়িকে গোড়া থেকে নরম করে তোলে এবং ব্রাশের ঘষাতেই ত্বকের ভেতরে জমে থাকা ময়লা উঠে আসে।
তাই ভালো ফলাফল পেতে শেভিং ব্রাশের জন্য আলাদা করে বাজেট করুন।

৫. ছোটো ছোটো স্ট্রোক দিন
তাড়াহুড়া করে অনেকেই খুব বড় করে স্ট্রোক টেনে দ্রুতই শেভ করা শেষ করে ফেলেন। পরবর্তীতে ত্বকে জ্বলন এমনকি ক্ষতও সৃষ্টি হয়ে যায়।
তাই স্ট্রোক দিন সবসময়েই ছোটো করে। একেক স্ট্রোকে সর্বোচ্চ ২ সে.মি দৈর্ঘ্যে দাড়ি কাটুন, এর বেশি নয়।
৬. বৃত্তাকারে ফোম মাখুন
পুরো মুখ জুড়ে দাড়ি কখনওই একই ভাবে ওঠে না। এমনকি একই দিকেও ওঠে না। তাই ফোম বা ক্রিম লাগানোর সময় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লাগান।
এতে করে পুরো দাড়িতেই ফোম পৌঁছাবে এবং শুকনা থাকার কারণে কেটেছড়ে যাবার সম্ভাবনা কম থাকবে।

৭. বেশি চেপে ধরে শেভ করবেন না
অনেকেই মনে করেন রেজর যত জোরে চেপে ধরা যায় দাড়ি তত বেশি গোড়া থেকে উঠে আসে। এই ধারনা সঠিক নয়। রেজরের ব্লেড যেন আপনার ত্বক ছুঁয়ে যায় শুধু এইটুকু পরিমাণ চাপই যথেষ্ট।
বাকি কাজ না হয় রেজরকেই করতে দিন। রেজর সাধারণত বাঁকাভাবে ধরে শেভ করতে হয়। রেজরের পেছনে আরও অনেক নির্দেশনাই দেয়া থাকে।

৮. ডাবল আপ
চুলে শ্যাম্পু করলে চুল যেমন সুন্দর এবং স্কালপ যেমন পরিষ্কার হয়, তার চেয়ে যদি শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার অথবা আগে তেল ব্যবহার করেন তাহলে কি আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না?
একই নিয়ম শেভের ক্ষেত্রেও কেন নয়? শেভিং ফোম লাগানোর আগে ব্যবহার করুন শেভিং অয়েল।

৯. থুঁতনির দাড়ি কাটুন একদম শেষে
থুঁতনির দাড়ি মুখের অন্যান্য অংশের চেয়ে একটু বেশি শক্ত এবং দাড়ি একটু মোটা হয়ে থাকে।
তাই এই অংশে হাত দিন একেবারেই শেষে। ততক্ষণে শেভিং ফোম বা জেলকে দাড়ি নরম করে দিতে সুযোগ দিন।

১০. স্টিম নিন
দাড়ির গোড়া নরম করে নেয়ার জন্য স্টিম ওয়াশ নিতে পারেন। গরম পানির ভাপে দাড়ির গোড়া আরও নরম হবে এবং শেভ করা হবে আরও সহজ।
১১. সোজাভাবে কাটুন
রেজর ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবসময় দাড়ি সোজাভাবে কাটছাঁট দেয়া উচিত। কখনো উল্টোভাবে রেজর টানা উচিত নয়।
এতে করে সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে পারে বা ত্বক ছড়ে যেতে পারে। এমনকি গালের পাশে দাড়ি হলে সেক্ষেত্রেও রেজর সমান্তরালে রেখে কাটা উচিত।

১২. সংবেদনশীল ত্বকের জন্য শেভিং তেল
একেক জনের ত্বক একেক রকম হয়। কারো ত্বক একটু রুক্ষ আবার কারো অনেক সংবেদনশীল।
শেভিং ক্রিম, জেল এমনকি ফোমেও অনেক সময় ত্বকে জ্বালাপোড়াভাব বাড়িয়ে তুলতে পারে। সেজন্য খুব সংবেদনশীল ত্বকের জন্য শেভিং তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
১৩. সম্ভব হলে সন্ধ্যার পরে শেভ করুন
অনেকে সকাল সকাল উঠে শেভ করে ক্যাম্পাসে বা অফিসে যান। এতে করে বেশ বড়ো একটা সময় সূর্যের আলোতে থাকা হতে পারে যার ফলে অনেক সময় ধরে ত্বক বিশ্রাম পায় না।
আবার অনেকের ত্বকে অ্যালার্জির কারণে শেভ করার পরে লালচে ভাব বা চুলকানি হয়। অনেকে উঁচু শার্টের কলার পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে শার্টের কলার দিনের পুরোটুকু গাল বা গলার সাথে লেগে থাকে যা বিরক্তিকর।
তাই সম্ভব হলে সন্ধ্যায় বা রাতে শেভ করুন। এতে করে গাল বা গলার ত্বক পুরো ৬-৮ ঘন্টার একটা লম্বা বিশ্রাম পাবে।
১৪. অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন
প্রতিনিয়ত শেভ করার জন্য প্রায় অনেক পুরুষের গালের ত্বক অনেক সংবেদনশীল, রুক্ষ এবং শুকনো হয়। তাই যারা নিয়মিত শেভ করেন তারা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ক্রিম বা শুধু অ্যালোভেরার রসও ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহারে গালের ত্বক আর্দ্র এবং নরম হয়।
১৫. ব্লেডের ব্যাপারে সাবধানী হন
অনেকক্ষেত্রে আমরা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন রেজর বা ব্লেড ব্যবহার করি তাই ভুলে যাই যে ব্লেডের অবস্থা দেখে শেভ করা উচিত, ব্র্যান্ড দেখে নয়।
ব্লেড অতিরিক্ত ব্যবহারে ভোঁতা হয়ে যেতে পারে, জং ধরতে পারে, রেজরের ব্লেডের উপরের অংশটি ক্ষয়ে যেতে পারে এমন অনেক কারণে আপনার রেজরটি পুরনো হয়ে যেতে পারে।
আর এই রেজর ব্যবহারে আপনার ত্বকে সংক্রমণ থেকে শুরু করে কাটাছড়াও হতে পারে। তাই প্রতিবার শেভের পূর্বে রেজর এবং ব্লেডের অবস্থা দেখে নিন, এরপরে শেভ শুরু করুন। সাধারণত প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহারে এক সপ্তাহের মাঝে এক বার ব্লেড পরিবর্তন করে নিলে ভালো।

১৬. কনসিলার ব্যবহার করুন
শেভিং এর দাগ বা ব্লেডের কারণে লালচে হয়ে যাওয়া ত্বক ঢাকতে কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে সহজেই দাগগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়।
১৭. আফটার শেভ ব্যবহারে বিরত থাকুন
আফটার শেভে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল থাকতে পারে যা আপনার ত্বককে একদম শুকনো করে তোলে।
পাশাপাশি এটি ত্বকে চুলকানির ভাব সৃষ্টি করে এবং ত্বকের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে বয়স বৃদ্ধির ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। আফটার শেভের পরিবর্তে পোস্টশেভ বাম ব্যবহার করুন।

১৮. বরফ ব্যবহার করুন
ত্বকের জ্বালাপোড়া রোধে বরফ ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে আরামদায়ক একটি অনুভূতির পাশাপাশি লালচে ভাবও কমে যাবে।
১৯. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
শেভের পরে ত্বক মসৃণ মনে হলেও আসলে ত্বক অনেক শুকনো থাকে। এসময় ত্বককে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা দিতে হয়। তাই শেভের পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
২০. শেভ করা শিখুন
ইলেকট্রিক শেভার আসার পরে বাবারা আর তাদের সন্তানদের শিখান না কীভাবে তারা সন্তানদের বয়সে শেভ করেছেন।
কিন্তু আসলে সকলেরই শেভ করা শেখা উচিত। ইলেকট্রিক শেভার দিয়ে সবধরনের স্টাইল করা সম্ভব নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরনো রেজরই ভরসা।

পরিশেষে একটাই কথা, স্টাইল সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যাপার। কোনো নরসুন্দরই আপনাকে আপনার মনের মতো স্টাইল করে দিতে পারবে না।
তাই নিজেই ঘরে বসে নিজেকে সাজান। আপনার নিজের তৈরি নতুন নতুন স্টাইলে আপনি হয়ে উঠুন আরও স্মার্ট।
Sample Block Quote
Praesent vestibulum congue tellus at fringilla. Curabitur vitae semper sem, eu convallis est. Cras felis nunc commodo loremous convallis vitae interdum non nisl. Maecenas ac est sit amet augue pharetra convallis nec danos.
Sample Paragraph Text
Praesent vestibulum congue tellus at fringilla. Curabitur vitae semper sem, eu convallis est. Cras felis nunc commodo eu convallis vitae interdum non nisl. Maecenas ac est sit amet augue pharetra convallis nec danos dui.
Cras suscipit quam et turpis eleifend vitae malesuada magna congue. Damus id ullamcorper neque. Sed vitae mi a mi pretium aliquet ac sed elitos. Pellentesque nulla eros accumsan quis justo at tincidunt lobortis denimes loremous. Suspendisse vestibulum lectus in lectus volutpat, ut dapibus purus pulvinar. Vestibulum sit amet auctor ipsum.