সোনামণির যত্নে নতুন মায়েদের কি কি মেনে চলতে হবে ?
সন্তানের পৃথিবীতে আসা নিয়ে বাবা উদ্বিগ্ন থাকেন বটে, কিন্তু মায়ের উদ্বিগ্নতা, আনন্দ এবং উচ্ছাসের সাথে যেন কোনো কিছুরই তুলনা চলে না।
মাসের পর মাস অপেক্ষা এবং অনেক পরিশ্রমের পর সেই মুহূর্ত যখন আসে তখন মায়ের জীবনে যেন সবচেয়ে বেশি আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। ভয়ংকর লেবার পেইনের পর সন্তানের কান্না প্রথম এবং শেষবারের মতো মায়ের মুখে হাসি ফোটায়।
গর্ভাবস্থায় মায়েরা এক রকম যুদ্ধক্ষেত্রে থাকেন বলা চলে। ভয়, আনন্দ, হতাশা আবার খুশির এক মিশ্র অনুভূতি জীবনে একই সাথে পাবার জন্য আর কোনো ঘটনা কেউ মনে করতে পারবেন বলে মনে হয় না।
কিন্তু এখানেই কি সব কিছু শেষ? আসলে না, এখান থেকেই জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু।
সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটির অনেক যত্ন নেয়ার মধ্য দিয়ে আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল মা। আপনাকে সফলতার এই স্বাদ দিতে আমাদের আজকের আয়োজন।
১. স্তন্যদান
বাচ্চাকে দুধ পান করানো নিয়ে হয়তো আপনার মনে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন বাচ্চারা যতবার চাইবে তাকে বুকের দুধ পান করান।
বুকের দুধ পানে বাচ্চার কোনো ক্ষতি হয় না বরং দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ পান করালে পাশপাশি বাচ্চার জন্য বাড়তি কোনো পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। আপনি যত বেশি দুধ পান করাবেন আপনি নিজেও তত বেশি সুস্থ থাকবেন।

দুধ পান করানোর সময় সাথে রাখুন নরম তোয়ালে, খাবার পানি এবং বাচ্চার ব্যবহার উপযোগী টিস্যু। আপনার নিজের সময় পার করার জন্য আপনি সাথে রাখতে পারেন আপনার পছন্দের বই। তবে এই সময়ে কোনো যান্ত্রিক জিনিসের সংস্পর্শে না আসাই শ্রেয়।
বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ পান করানোর ফলে আপনি নিজের ত্বকে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখতে পারেন। নিয়মিত অলিভ অয়েল বা ক্রিম ম্যাসাজ করুন।
বুকের দুধ পান করানো হয়ে গেলে কয়েক ফোঁটা দুধ গড়িয়ে পড়লে সেটি ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এটি আপনার ত্বকের জন্য ভালো এবং বাচ্চার মুখে গেলেও কোনো সমস্যা হবার সম্ভাবনা নেই।
২. সোনামণির ঘুম
বাচ্চার ঘুমের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করতে চেষ্টা করুন। সবসময়ে একই জায়গায় ঘুম পাড়াতে নিয়ে গেলে বাচ্চাও মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে পারবে।
ঘুমের সময় ঠিক রাখুন। বাচ্চার ঘুমের সময় ঘরে আলো জ্বেলে রাখবেন না এবং শব্দ কম হয় এমন জায়গায় ঘুমানোর জন্য রাখুন।
বাচ্চার রুমের কাছে হোয়াইট নয়েজের ব্যবস্থা রাখতে পারেন যেন বাইরের শব্দ বাচ্চার কানে এসে ঘুম নষ্ট না করে দেয়।

বাচ্চারা ছোটোবেলায় অনেক বেশি হাত পা নাড়াচাড়া করে বলে একটু বেশি ঘুমানো স্বাভাবিক, তাই এতে ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই।
ঘুমানোর সময় বাচ্চাকে আরামদায়ক কাপড় পরান। সারাদিনের পরে থাকা কাপড় রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই বদলে দিন।
রুমে মশা যেন না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন অথবা বাচ্চার জন্য আলাদা মশারি কিনে নিন।
৩. মায়ের যত্নে
সন্তানের পৃথিবীতে আসার পর আপনি নিশ্চয়ই অনেক খুশি। এবার নিজের স্বাস্থ্যের দিকেও একটু মনোযোগী হয়ে উঠুন।
প্রতিদিন চেষ্টা করুন হালকা ব্যায়াম করতে। ব্যায়াম করার মতো সময় না পেলে একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। ফুলের বাগান বা সুন্দর কোনো পার্কে হাঁটতে যান।
ব্যায়ামে শরীরে বেশি করে এন্ডরফিনস হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন মন ভালো রাখতে সহায়তা করে।
বাসার ভারি কাজগুলো করার জন্য কাউকে রাখতে পারেন। ভারি কাজগুলো করার জন্য সময় নিন। এখনই কোনো কাজ শুরু করলে আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। যেহেতু সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন তাই আপনার শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে।

৪. বাচ্চার সুস্বাস্থ্যে
এই সময়ে আপনার প্রধান লক্ষ্য হলো বাচ্চার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। বাচ্চাকে যে রুমে রাখছেন বিশেষ করে সেই রুম ধূলাবালি মুক্ত রাখুন।
বাচ্চাকে সপ্তাহে দুই বার গোসল করাতে পারেন। প্রতিদিন গোসল করানোর প্রয়োজন নেই।
কোনো খেলনা দিলে সেই খেলনা ভালো মতো পরিষ্কার করে নিন কারণ বাচ্চারা এই সময়ে হাতের কাছে যা পায় সেটাই মুখে নেয়। রুম ভালো মতো ব্যাকটেরিয়া নাশক ওষুধ দিয়ে মুছে নিন এবং আসবাবপত্রও পরিষ্কার রাখুন।
খাবার পরে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দোলাবেন না। অবশ্যই বাচ্চার পিঠে আলতো করে হাত দিয়ে পিঠে বুলিয়ে ঢেঁকুর তোলাতে হবে। না হলে বাচ্চার খাবার হজম হবে না এবং বমি হয়ে যেতে পারে।
যদি বাচ্চাকে ডায়পার পরান তাহলে অবশ্যই সেটি বারবার বদলে দিতে হবে। ডায়পার ভেজা থাকলে বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যাবে এবং জীবাণু থেকে ত্বকে ফুসকুড়ি সহ আরও অনেক সমস্যা হতে পারে।

৫. ডায়েরি লিখুন
একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন সন্তানের ছোটো ছোটো অভ্যাস এবং সমস্যাগুলো। এতে করে আপনি আশেপাশে না থাকলেও অন্য কেউ সন্তানের যত্ন নিতে পারবে।
ডায়েরিতে থাকতে পারে বাচ্চার খাবারের সময়, ঘুমের অভ্যাস এবং আপনি যেভাবে যত্ন করে তুলছেন তার কিছু বর্ণনা। এতে করে আপনিও এক নজরে দেখে নিতে পারবেন।
প্রতিদিনের সমস্ত বিষয়গুলো। সপ্তাহ শেষে দেখতে পারেন কোনো পরিবর্তন আছে কি না।

একজন মা হিসাবে অবশ্যই আপনি আমাদের চেয়ে বেশি সচেতন। তবুও কিছু পরামর্শ রইলো আপনার এবং নবাগত সন্তানের জন্য। আপনাদের সুস্থ জীবন কামনা করে আজকের আয়োজন এই পর্যন্তই।
Sample Block Quote
Praesent vestibulum congue tellus at fringilla. Curabitur vitae semper sem, eu convallis est. Cras felis nunc commodo loremous convallis vitae interdum non nisl. Maecenas ac est sit amet augue pharetra convallis nec danos.
Sample Paragraph Text
Praesent vestibulum congue tellus at fringilla. Curabitur vitae semper sem, eu convallis est. Cras felis nunc commodo eu convallis vitae interdum non nisl. Maecenas ac est sit amet augue pharetra convallis nec danos dui.
Cras suscipit quam et turpis eleifend vitae malesuada magna congue. Damus id ullamcorper neque. Sed vitae mi a mi pretium aliquet ac sed elitos. Pellentesque nulla eros accumsan quis justo at tincidunt lobortis denimes loremous. Suspendisse vestibulum lectus in lectus volutpat, ut dapibus purus pulvinar. Vestibulum sit amet auctor ipsum.